সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সোহেল রানা সোহাগ (২৮) নামে এক যুবককে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামী থেকে বাঁচাতে বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রত্যয়ন পত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী সাহিদা খাতুন (১ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুল্লাহ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ পৌর এলাকার আসান বাড়ী গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা সোহাগের সাথে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামের ভুক্তভোগী সাহিদা খাতুন ও আমিরুল ইসলামের মেয়ে আছিয়া পারভীন ছনির ২০১২ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ওই যুবক অকারণে তার মেয়েকে লাগাতার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে তিনি গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং প্রথম স্ত্রী আছিয়া পারভীন ছনিকে তালাক দেন। তবে তার ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তান ছামিউল হককে জোরপূর্বক তার কাছে (যুবকের) কাছেই রেখে দেন।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, সোহেল রানা সোহাগের প্রথম স্ত্রী আছিয়া পারভীন ছনি নিরুপায় হয়ে আদালতে ওই যুবকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৬৯/২০২০। তবে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন বাদী পক্ষকে অবগত না করেই ওই আসামীকে মামলা থেকে বাঁচাতে একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রত্যয়ন পত্র দেন। আর সেই প্রত্যয়ন জমা দিয়েই শেষ পর্যন্ত তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে যান।
বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেনের দেওয়া সেই প্রত্যয়ন হুবুহু তুলে ধরা হলো-
“সোহেল রানা সোহাগ, পিতা: মো. শরিফুল ইসলাম, গ্রাম: আসানবাড়ি, ডাকঘর: বিনসাড়া, উপজেলা: তাড়াশ, জেলা: সিরাজগঞ্জ। তিনি মোছা. আছিয়া পারভীন (ছনি), পিতা: আমিরুল ইসলাম, গ্রাম: কাজিপুর, ডাকঘর: বিনসাড়া, উপজেলা: তাড়াশ, জেলা: সিরাজগঞ্জ কে বায়ান তালাক প্রদান করেছে। যাহার কপি বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ১০ ফেব্রæয়ারি ২০২০ই যাহার স্মারক নং-৮১ পাওয়া যায়। পত্র খানা পড়ে নথি ভুক্তকরে পরবর্তীতে উভয় পক্ষের মাঝে আপস মিমাংসার চেষ্টা করেছি। ছেলে পক্ষ রাজি থাকলেও মেয়ে পক্ষের কোন সারা পাওয়া যায় নাই। বিষয়টি অবগতির জন্য প্রেরণ করা হলো। সর্বোপরি সোহেল রানা সোহাগ আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা। আমার জানা মতে সে একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি। আমি তাহার উজ্জল ভবিষৎ ও মঙ্গল কামনা করছি।”
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন জানান, বিষয়টি মিমাংসার জন্য উভয় পক্ষ ডাকা হয়েছে। তবে বাদী পক্ষ সাড়া দেন নাই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দেখা হবে।