বর্তমানে এ মাদ্রাসায় এবতেদায়ী প্রথম শ্রেণি থেকে দাখিল পর্যন্ত (প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে) পড়া-লেখা করছে ৪৯৫ জন ছাত্র-ছাত্রী। অধ্যক্ষসহ শূন্য পদের তিনজনকে বাদ দিয়ে শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন ২৫ জন। শ্রেণিকক্ষ সংকটে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নির্মিত সেই জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ দান করা হচ্ছে। একই কক্ষে দুইদিক করে বসিয়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলছে। এরপরও শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীদের আবাসিক রুমে এমনকি লাইব্রেরিতেও পাঠদান করা হয়ে থাকে। বেশি মুশকিলে পড়েছে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই। মাঝে-মধ্যে মাদ্রাসার সঙ্গে মসজিদের ভেতরেও পাঠদান করা হয়। এদিকে ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেন্টের নির্মাণ করে দেওয়া ভবনটির শ্রেণিকক্ষে এক বেঞ্চে পাঁচ-ছয়জনকে গাদাগাদি বসতে হচ্ছে। একটি কক্ষে মাদ্রাসার লাইব্রেরি এবং অফিস করা হয়েছে। সেখানে সংকুচিত হয়েও একসঙ্গে ২৫জন শিক্ষক-কর্মচারী বসতে পারেন না। কয়েকজন অফিসকক্ষে বসেন আর নিরুপায় হয়ে অন্যরা মাদ্রাসার সামনে মাজার প্রাঙ্গণে আমগাছের নিচে বসে থাকেন।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মাদ, রিয়াদ হাসান, রুপম সরকার, শেখ ফরিদ, মোঃ নাছিম, নুরজাহান খাতুন, সুমাইয়া খাতুন, তাছলিমা জানায়, তাদের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষের ছাদ এবং দেয়ালের পলেস্তারা নষ্ট হয়ে সিমেন্ট, বালু ও ইট-খোয়া খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। জরাজীর্ণ কক্ষে ক্লাস করার সময় প্রায়শই ছাদ ও দেয়াল থেকে ইট-খোয়া খসে পড়ে। আতঙ্কে তারা মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করতে পারে না। সিমেন্ট, বালু ও ইট-খোয়ায় তাদের বই-খাতা আর পরনের পোশাক ময়লা লেগে নষ্ট হয়ে যায়। আর এক বেঞ্চে গাদাগাদি বসে গরমে ঘেমে ঠাণ্ডা-কাশিতে মাঝে-মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।
নওগাঁ শরীফিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ মাদ্রাসাটির শিক্ষার মান বেশ ভালো। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকটে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। ঝড়-বৃষ্টির দিনে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জীর্ণ ভবনের কক্ষগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে বের করে নিয়ে যেতে হয়। তিনি এও বলেন, বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে নতুন-পুরনো মিলে ১০টি কক্ষ রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি এবং অফিস রুম মিলে অনুরূপ আরো ১০টি কক্ষ প্রয়োজন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষ সংকট নিরসনে সরকারিভাবে নওগাঁ শরীফিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণ করা অতীব জরুরি। তিনি শিগগিরই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত আবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানোর কথা জানান।’