চলনবিলের অসংখ্য কৃষিজীবী প্রান্তিক পরিবার হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এদের মধ্যে বহু অভাবী পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছেন।
চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশ উপজেলার পৌর এলাকার কহিত গ্রামের রুহুল আমীন (৫৩) নামে একজন হাঁসের খামারী বলেন, বিল এলাকাতে হাঁস পালন বেশ লাভজনক। বর্ষা মৌসুমে শামুক, ঝিনুক, শ্যাওলা ও লতাপাতা খেতে পায়। সুষ্ক মৌসুমে খেতে পড়ে থাকা ধান খাওয়ানো হয়। বাড়তি খাবার তেমন লাগেনা। এসব সুবিধার জন্য চলনবিল অঞ্চলে অসংখ্য হাঁসের খামার গড়ে উঠেছে।
এই খামারী আরো বলেন, ৪০ বছর ধরে তিনি হাঁস পালন করছেন। কখনও লোকসান হয়নি। এরমধ্যে দুই বিঘা জমি কিনেছেন ও ছয় বিঘা জমি বন্ধক রেখেছেন। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। এক ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন। বর্তমানে নাতি-নাতনি নিয়ে তার সুখের সংসার। আরেক মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দু থেকে তিন বছর পর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছেন।
পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রামের ইউনুছ আলী (৫৬) নামে আরেকজন হাঁসের খামারী বলেন, তার সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। স্ত্রীর সাথে দিন মজুরের কাজ করে সে অভাব দূর হতোনা। উপায়ন্তর না দেখে হাঁস পালন শুরু করি। এরপর বছর যেতে না যেতেই আমার সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে।
সগুনা ইউনিয়নের মাকড়শন গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন লাবু বলেন, আট বছর ধরে তিনি কৃষি খেত চাষাবাদের পাশাপাশি হাঁস পালন করছেন। এ থেকে তার বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হচ্ছে।
(৮ নভেম্বর) সোমবার সকালে সরজমিনে দেখা গেছে, চলনবিলের কাটা গাঙের পাড় ও মাকড়শন খালের পাড়ে অনেক খামারী মাচার উপর ও তাবু ফেলে হাঁস পালন করছেন।
জানা গেছে, অধিকাংশ খামারীরা খাঁকি ক্যাম্পবেল ও ঝিনুক জাতের হাঁস পালন করছেন। এসব হাঁস টানা ছয় মাস ডিম দেয়। পরের ছয় মাস থেকে থেমে ডিম দেয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সোহেল আলম খান বলেন, খামারীদের প্রণোদনা ও ব্যবস্থাপত্র দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।