ঢাকারবিবার , ২২ জানুয়ারি ২০১৭
  • অন্যান্য
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ-আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের পরিবার
  6. আলোচনার শীর্ষে
  7. কবিতা
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দোয়া প্রার্থনা
  12. নারী ও শিশু
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও
  15. মতামত বিশ্লেষণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে নবীনগর পাইলট মডেল স্কুল

সময়ের সংবাদ
জানুয়ারি ২২, ২০১৭ ৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সময়ের সংবাদ: শতায়ুর সিঁড়ি পেরিয়ে নিরলসভাবে শিক্ষা ও জ্ঞানের দ্যুতি ছড়াচ্ছে নবীনগর উপজেলার বুড়ি নদী তীরের ঐতিহ্যবাহী নবীনগর পাইলট মডেল স্কুল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই স্কুলটি এ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার মানুষকে শিক্ষা ও জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করছে।

এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক আবু কামাল খন্দকারের সম্পাদিত বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি স্মরণিকার তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, এ অঞ্চলের মানুষ যখন কুসংস্কারাচ্ছন্ন ও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত তখনই সত্য এবং ন্যায়ের দীপ জ্বালিয়ে পশ্চাত্পদ এ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য এগিয়ে আসেন শহীদ মুনির চৌধুরী ও জাতীয় অধ্যাপক কবির চৌধুরীর নানা কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ভূবনঘর গ্রামের মৌলভী আবদুস সোবহান উকিল (আব্দু মিয়া)। তিনি ওকালতি পাস করে নিজ এলাকায় মুরাদনগর মুন্সেফ আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৮৮৫ সালে এ মুন্সেফ আদালত মুরাদনগর থেকে নবীনগর স্থানান্তরিত হলে পেশাগত প্রয়োজনে তিনি সপরিবারে নবীনগর চলে আসেন। তার প্রখর ব্যক্তিত্বের প্রভাবে অল্প দিনেই স্থানীয় আইনজীবীদের মধ্যে শীর্ষস্থানে উপনীত হন। স্থানীয় জমিদার বাড়ির সকল মামলা তিনি পরিচালনা করতেন। প্রতিষ্ঠিত উকিল হিসেবে যেমন প্রচুর অর্থ রোজগার করেছেন, তেমনিভাবে উপার্জিত অর্থের বেশির ভাগই ব্যয় করেছেন জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কাজে। তত্কালীন আদালতের মুন্সেফ, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসস্থল থানা সদরে হওয়ায় একটি মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সে সময় নবীনগর ত্রিপুরা জেলার অধীনে ছিল। স্থানীয় বার লাইব্রেরি, মুন্সেফ কালী নাথ ধর ও জমিদার কৃষ্ণ মোহন রায় চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকার নওয়াব, ত্রিপুরার মহারাজা এবং জেলা বোর্ডের সহযোগিতায় শিক্ষানুরাগী ও আইনজীবী মৌলভী আবদুস সোবহান ১৮৯৬ সালের ১ ডিসেম্বর ৫.৪৬ একর জমির উপর নবীনগর হাই ইংলিশ (এইচই) স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। সেদিনের হাই ইংলিশ স্কুলটিই আজকের নবীনগর পাইলট মডেল স্কুল। ১৮৯৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ী স্বীকৃতি দেয়।
প্রতিষ্ঠাকালীন প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন প্যারীচরণ দাস এবং বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন মো. আবু মোছা। প্রধান শিক্ষক প্যারীচরণ দাস, একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক, সাতজন ইংরেজি শিক্ষক, দুজন পণ্ডিত ও একজন মৌলভী শিক্ষক নিয়ে এ স্কুলের যাত্রা শুরু। পরের বছরই ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৮৮তে দাঁড়ায়। ত্রিপুরা ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকে ১২ জন ছাত্র এ স্কুলে ভর্তি হয়েছিল।  মৌলভী আবদুস সোবহান উকিল বিনা বেতনে ফার্সি শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শত বছরে বদলেছে অনেক চিত্র। পরিবর্তন এসেছে শিক্ষা কার্যক্রমে। শিক্ষার মানোন্নয়নে হয়েছে আধুনিক ভবন ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ। কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট কানেকশন, লাইব্রেরি, বিজ্ঞানাগার, ক্লাব, খেলার মাঠ, মসজিদ এবং শতাধিক দোকান রয়েছে। বর্তমানে এ স্কুলে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কারিগরি শাখাসহ মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭শ, শিক্ষক আছেন ৩২ জন এবং কর্মচারী আছেন সাতজন।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা সুনামের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন ও তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম  রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে এ স্কুলের ভীত তৈরি হয়েছে তারা হলেন প্যারীচরণ দাস, চনদ্রকান্ত ঘোষ, জ্ঞানদা প্রসাদ দাস, নীলকুমার চক্রবর্তী, বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য, খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, তারক চন্দ্র চক্রবর্তী, যোগেশ চন্দ্র গুপ্ত, বিহারীলাল চক্রবর্তী, মো. আবদুল হালিম, মো. কেরামত আলী, মো. আশরাফ আলী, মো. ওসমান গনি, মো. সামসুজ্জামান, সৈয়দ আহমেদ, মো. আবুল হোসেন চৌধুরী এবং মো. শহীদুল হক।
এ স্কুলের অনেক কৃতী শিক্ষার্থী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত নবীনগর উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য ১৯৯২ সালে স্কুলটি পাইলট স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হয়। এ স্কুলে প্রতিবছর জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক বৃত্তি এবং জিপিএ-৫ পেয়ে আশানুরূপ ফলাফল করে আসছে।
প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পরে সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জিকরুল আহম্মেদ খোকনের প্রচেষ্টায় সরকারিকরণের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে বর্তমান সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী ফয়েজুর রহমান বাদলের নিজস্ব অর্থায়নে স্কুলের অডিটরিয়ামের দ্বিতল ভবন এবং খেলার মাঠের চারদিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। ইতোমধ্যে সরকারিকরণের প্রয়োজনীয় নিদের্শনা ও কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানে এসেছে।
প্রধান শিক্ষক মো. আবু মোছা বলেন, স্কুলটি মানুষ গড়ার কারখানায় পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমিক এবং আর্দশ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিষ্ঠানের গৌরবোজ্জ্বল পতাকা  আরও ঊর্ধ্বমুখি হোক এটাই একান্ত প্রার্থনা।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।