গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
তাড়াশের মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের হামকুরিয়া গ্রামে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। এ গ্রামের লোকজন যুগযুগ ধরে থাকছেন যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্ভোগে। বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে একটি ব্রিজ তাদের স্বস্তি ফিরিয়ে দিতে পারে।
আগের দিনে তাদের হামকুরিয়া ওয়াবদা বাঁধ থেকে নৌকায় হামকুরিয়া গ্রামে আসতে হতো। পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হওয়ার সাথে সাথে গ্রামটির পাশ দিয়ে হাটকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ সংকট নামক দুর্ভোগের দূরত্ব কমে আসে । গ্রামবাসীর উদ্যোগে তৈরি করা হয় হাইওয়ে সড়ক থেকে কাটাখালি খালের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো। সেই থেকে এ গ্রামের মানুষরা একমাত্র মাধ্যম হিসেবে যাতায়াত করছেন এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকে দিয়ে।
হামকুরিয়ার অধিকাংশ ফসলি জমি হাইওয়ে পার হয়ে দক্ষিণ শামপুর মাঠে হওয়ায় ফসল ঘরে তুলতে এবং বাজারজাত করতে কৃষি নির্ভর এসব মানুষের দীর্ঘকাল ধরে গুণতে হচ্ছে বহু লোকসান। প্রতিবছর মৌসুমে ইরি-বোরো, পিয়াজ, রশুন, ভুট্টা, গমসহ সব ধরনের ফসলাদি চাষাবাদ নিয়ে নিরুপায় কৃষকদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাকো দিয়ে ফসলাদি পারাপার সম্ভব হয়ে ওঠে না। বিকল্প পথ হিসেবে নৌকা বা গাড়ি করে নিতে গুণতে হয় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ টাকা। অপচয় হয় সময়ের।
হামকুরিয়া প্রত্যন্ত গ্রাম হওয়ায় এখান থেকে পার্শ্ববর্তী দবিলা কলেজ, দোবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্যান্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা এক হাতে বই এবং আর এক হাতে পায়ের জুতা ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু কষ্টে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাওয়া-আসা করেন। কোন নারীর প্রসব ব্যাথা দেখা দিলে বা কোন মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকজন ধরাধরি করে বাঁশের সাঁকো পারাপার করে দিতে হয়।
আব্দুল কাদের, বাহাদুর প্রামানিক, রহিম মন্ডল, রওশন মিঞাসহ একাধিক ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক জানান, হামকুরিয়া গ্রামের একমাত্র প্রবেশ পথ ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে তৈরি হওয়ায় বছরের পর বছর ধরে তাদের ছেলেমেয়েদের যাতায়াত করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামের কৃষকরা চাষাবাদ নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
হামকুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলবি মো. শাজাহান আলী জানান, গ্রামটির একমাত্র প্রবেশদ্বারে ব্রিজ না থাকায় মানুষ যুগযুগ ধরে ঝুকিপূর্ণ বাঁশের সঁািকো দিয়ে যাতায়াত করছেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনি কৃষকরাও তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বিপাকে পড়েছে ।