ঢাকাবুধবার , ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • অন্যান্য
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ-আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের পরিবার
  6. আলোচনার শীর্ষে
  7. কবিতা
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দোয়া প্রার্থনা
  12. নারী ও শিশু
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও
  15. মতামত বিশ্লেষণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুখে ‘শিকড়’ নিয়ে বার্ন ইউনিটে শাহানা

সময়ের সংবাদ
ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৭ ৭:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সময়ের সংবাদ: শাহানা খাতুনের বয়স ১০ বছর। লাল সুতির একটি ফ্রকের সঙ্গে লাল প্রিন্টের একটি পায়জামা পরেছে। মাথায় তেল দিয়ে বিনুনি করেছে। মুখে শিশুসুলভ হাসি। তবে মুখের থুতনি, নাক, দুই কানের লতিতে গাছের শিকড়ের মতো কিছু একটা গজিয়েছে। তাতে ব্যথা হয়। চুলকায়। তাই একটু পরপর শাহানা দুই হাত দিয়ে চুলকানোর চেষ্টা করছে। অনেক সময় জিব বের করে থুতনিতে চুলকানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নেত্রকোনার শাহানা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হয়েছে কয়েক দিন আগে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শাহানা ‘এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’ বা এ ধরনের কোনো রোগে আক্রান্ত। রোগটি ‘ট্রি-ম্যান’ (বৃক্ষমানব) সিনড্রোম নামেও পরিচিত।

শাহানার আগে ভর্তি হওয়া ‘বৃক্ষমানব’ আবুল বাজনদার ও শিশু রিপন দাসও বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। রিপনের পাশের বিছানাতেই ভর্তি শাহানা।

শাহানার শরীরে কালো কালো গোটা হয়েছে। সে জানায়, শুরুতে গোটাগুলো এমনই থাকে, পরে বড় হয়।

বার্ন ইউনিটের জাতীয় সমন্বয়কারী চিকিৎসক সামন্ত লাল সেন  বলেন, শাহানা যে লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তাকে ঠিক ‘ট্রি-ম্যান’ বলে মনে হচ্ছে না। তবে ওই জাতীয় কিছু একটা বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এখন যে অবস্থায় আছে, তা অস্ত্রোপচার করে ভালো করা সম্ভব বলেই মনে হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, শাহানা রাতের খাবার খাওয়া শেষ করেছে। কী দিয়ে খেয়েছ—জানতে চাইলে সে বলে, ‘গোশত দিয়া খাইছি।’

শাহানার নাকে নাকফুল। কানে দুল। তবে শিকড়ের জন্য কানের দুল প্রায় ঢেকে গেছে।

শাহানার বাবা শাহজাহান অন্যের খেত-খামারে কাজ করেন। সরকারের খাসজমিতে ঘর তুলে থাকেন। তিনি জানান, শাহানার বয়স যখন কয়েক মাস, তখন তার মা লিভারে পানি জমে মারা যান। মেয়ের কথা চিন্তা করে আর বিয়ে করেননি শাহজাহান।

শাহজাহান জানান, জন্মের পর থেকেই শাহানার শরীরে ঘামাচির মতো দেখা দেয়। আস্তে আস্তে তা বড় হতে থাকে। কয়েক মাস ধরে তা শিকড়ের আকার নেয়। এর মধ্যে একটি শিকড় নিজে নিজে ঝরে গেছে।

শাহজাহান বলেন, মেয়ে, মা ও ছোট বোনের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। কাজ করে যা আয় করেন, তা সবার পেছনে চলে যায়। মেয়েকে এক মাস হোমিওপ্যাথির ওষুধ খাইয়েছেন। এতে কাজ হয়নি। ঢাকা থেকে এক নারী সাংবাদিক তাঁর গ্রাম বালুচরায় গিয়ে শাহানার খোঁজ পেয়ে তাকে ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করেছেন।

শাহানা গ্রামের স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। তবে শিকড়ের জন্য বন্ধুরা হাসাহাসি করে। অনেক সময় বাজে কথা বলে। শাহানা জানায়, এসব কথা শুনলে তার খারাপ লাগে।

শাহানার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন পাশের বিছানায় শুয়ে আট বা নয় বছরের শিশু রিপন মুঠোফোনে গেমস খেলছিল। অস্ত্রোপচারের পর দুই হাত দিয়ে এখন নিজে নিজে সবকিছু ধরতে পারে। দুই পায়ে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা। প্রায় দুই মাস আগে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের রিপন হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রায় সাত মাস ধরে। আর শিকড় গজানো হাত-পা নিয়ে আবুল বাজনদার গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। ১৮ দফা অস্ত্রোপচারের পর তাঁর অবস্থা ভালোর দিকে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।