ঢাকামঙ্গলবার , ২৪ জানুয়ারি ২০১৭
  • অন্যান্য
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ-আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের পরিবার
  6. আলোচনার শীর্ষে
  7. কবিতা
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দোয়া প্রার্থনা
  12. নারী ও শিশু
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও
  15. মতামত বিশ্লেষণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভূতাত্বিক ঐতিহ্য’ হচ্ছে জাফলং

সময়ের সংবাদ
জানুয়ারি ২৪, ২০১৭ ৪:০২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সময়ের সংবাদ: দেশি-বিদেশি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে সৌন্দর্যের নৈসর্গিক স্থান খ্যাত সিলেট জেলার জাফলং শিগগির ‘ভূতাত্বিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষণা হচ্ছে। ভারতের মেঘালয় পর্বতের উভয় তীরের ভূপ্রকৃতিতে সমৃদ্ধ এ এলাকাটি বিনোদনের জন্য আসা পর্যটকদের কাছে নান্দনিক ও আকর্ষণীয়। প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। জাফলংয়ে রয়েছে বড় বড় টিলা। এর পাশ দিয়ে বয়ে চলা ডাউকি নদীতে আছে চুনাপাথরের খনি; কিন্তু অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে নদী থেকে পাথর তোলায় এখানকার পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘ভূতাত্তি্বক ঐতিহ্য’ বা সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর নিরাপত্তা সুরক্ষার দায়িত্বে থাকবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এলাকাটি সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা হলে টিলার আশপাশ থেকে পাথর তোলা বন্ধ হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপ শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর খনিজসম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকা বাংলাদেশের ভূতাত্তি্বক ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ভূতত্ত্ববিদরা এটিকে বাংলাদেশের ভূতাত্তি্বক জাদুঘর বলে থাকেন। এই অঞ্চলে রয়েছে অধিকাংশ পাললিক শিলার স্তর। চুনাপাথরের স্তরসহ কয়েকটি অতি পুরনো পাললিক শিলার স্তর ডাউকি নদীর পাড়ে একটি টিলায় উন্মুক্তভাবে রয়েছে। এ ধরনের স্তর বাংলাদেশে আর কোথাও নেই। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ অঞ্চলে ফিল্ডওয়ার্ক করে থাকেন। তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ অনুসন্ধানে গবেষণার কাজেও ইয়োসিন যুগের এ শিলাস্তরগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিক দিক বিবেচনায় সরকার জাফলংকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০০৯ সালে ভূতাত্তি্বক জরিপ অধিদপ্তরের একজন পরিচালককে আহ্বায়ক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ, সিলেট জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে একাধিক সভাও অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করে ওই এলাকাকে সংরক্ষিত ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। সর্বশেষ গত বছর মার্চে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যানকে এ সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণসহ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই কমিটি সরেজমিন পরিদর্শন করে সুপারিশ সংবলিত মতামত দেয়। এতে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো এখানে একটি ভূতাত্তি্বক জাদুঘর প্রতিষ্ঠা এবং সীমানা প্রাচীর করা যেতে পারে। সুপারিশে আরও বলা হয়, অধিগ্রহণ করা ২২ দশমিক ৫৯ একর জমিতে কোনো মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, বাড়িঘর বা অন্য কোনো সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা না থাকায় এসব জমি অব্যবহৃত রয়েছে। অধিগ্রহণকৃত জমি থেকে বিজিবির অনুকূলে তিন একর জমি বাদ দিয়ে ভূতাত্তি্বক জরিপ অধিদপ্তরের অনুকূলে জায়গা বরাদ্দ করে একে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা যেতে পারে।

অন্যদিকে সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে রয়েছে পিয়াং নদীর অববাহিকা। সিলেট সদর থেকে কোয়ারিতে যাওয়ার জন্য সরাসরি পাকা রাস্তা রয়েছে। রয়েছে বিজিবির ক্যাম্প।

এ বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী  বলেন, ভূপ্রকৃতির দিক দিয়ে জাফলং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। পাশাপাশি আগামী প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন এবং গবেষণার জন্য এ এলাকাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ হুমকির মুখে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ‘ভূতাত্তি্বক ঐতিহ্য’ ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে এ স্থানকে দেখভাল করার জন্য জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক এবং অন্যান্য বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে করা একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি কাজ করছে। সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণার পর খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট জেলা প্রশাসক ও বিজিবির সেক্টর কমান্ডার এটি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নেবেন।

ভূতাত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নেহাল উদ্দিন বলেন, জাফলংকে জাতীয় স্বার্থেই সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এজন্য ভূতাত্তি্বক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করলে কেউ পরিবেশের ক্ষতি করতে পারবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্তি্বক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও ভূতত্ত্ববিদদের জন্য এলাকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এলাকাটি ভূতাত্তি্বক ঐতিহ্য ঘোষণা কার্যকর হলে এর পরিবেশ বিপর্যয় রোধ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। টিলা কাটা ও যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়িও বন্ধ হবে।

এদিকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ডাউকি নদীর কিছু অংশকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। গবেষণার জন্য ডাউকি অঞ্চলকে ভূতাত্তি্বক ঐতিহ্য ঘোষণা করলে এর পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষিত থাকবে। এ বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার কথাও জানিয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, দেরিতে হলেও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। ক্ষতি যা হওয়ার তা অনেক আগেই হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এটি যথাযথভাবে প্রতিপালনে সরকারকে নিয়মিত নজরদারি করতে হবে। জাফলংয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সরকার আরও আন্তরিক হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।