এর আগে নকল, নিম্নমানের হ্যান্ডসেট কিংবা ভুয়া আইএমইআই নম্বর দিয়ে হ্যান্ডসেট আমদানি হলেও আন্তর্জাতিক কোনো ব্র্যান্ডের আইএমইআই নকল করার ঘটনা ঘটেনি।
বিষয়টি টেলিযোগাযোগ খাতের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কোনো চক্র বড় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য এসব হ্যান্ডসেট কৌশলে দেশের ভেতরে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মঈনুল খান।
শনিবার বিকেলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আগাম তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহজনক চালান হিসেবে গত ১৮ জানুয়ারি জি ফোন ব্র্যান্ডের ১৪ হাজার ৯০০টি হ্যান্ডসেট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। প্রাথমিকভাবে অনলাইনে এসব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করে দেখা যায়, এগুলো আসুস জেন ফোন ব্র্র্যান্ডের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া। পরবর্তী সময়ে বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং আসুস বাংলাদেশের কাছে যাচাই করে তারা নিশ্চিত হন আইএমইআইগুলো আসুস জেন ফোন ব্র্যান্ডের। এরপর শনিবার চূড়ান্তভাবে এই হ্যান্ডসেটের চালান জব্দ করা হয়। হংকং থেকে আসা চালানে এসব হ্যান্ডসেটের আমদানিকারক আলী এন্টারপ্রাইজ এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সাউথ ইস্ট এশিয়া।
মঈনুল খান জানান, আইএমইআই নম্বর নকল করার মধ্য দিয়ে আমদানিকারকের উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয়ের সৃস্টি হয়েছে। কারণ এসব হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করা হলে সেগুলো সঠিকভাবে ট্র্যাক করা সম্ভব হতো না বা ট্র্যাকিংয়ের বাইরে থাকত। এসব হ্যান্ডসেট ইন্টারনেট মডেম হিসেবে ব্যবহার করে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কে ব্যবহার, অবৈধ আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানে ব্যবহারের ঘটনাও ঘটাতে পারত।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভুয়া আইএমইআই নম্বর দিয়ে হ্যান্ডসেট, মডেম, ট্যাব, রাউটার প্রভৃতি আমদানি কঠোর নজরদারিতে থাকায় অপরাধীচক্র আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর নকল করার কৌশল নিতে পারে।
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, উগ্রপন্থা এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্তরা কম মূল্যের হ্যান্ডসেট ব্যবহার করছে, যেগুলোতে ভুয়া আইএমইআই নম্বর থাকে। তারা এসব হ্যান্ডসেট ইন্টারনেট সংযোগের জন্য, আবার কম সময় ব্যবহারের জন্যও বেছে নেয়।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, কমমূল্যের এসব হ্যান্ডসেটের ভোক্তা মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ। ফলে কমমূল্যের হ্যান্ডসেট নকল কিংবা অতি নিম্নমানের আমদানির ফলে সাধারণ মানুষও প্রতারিত হন। এ ছাড়া ব্যবহারকারীদের ঝুঁকিরও সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া এভাবে হ্যান্ডসেট আমদানির ফলে বৈধ ব্যবসায়ীরা আর্থিক এবং নিরাপত্তাজনিত দু’ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হন।
অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট আমদানির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান মঈনুল খান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বিএমপিআইএর সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, সংগঠনের কোনো সদস্য অসৎ উদ্দেশ্যে এবং অবৈধভাবে হ্যান্ডসেট আমদানির সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।