ঢাকাসোমবার , ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
  • অন্যান্য
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ-আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের পরিবার
  6. আলোচনার শীর্ষে
  7. কবিতা
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দোয়া প্রার্থনা
  12. নারী ও শিশু
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও
  15. মতামত বিশ্লেষণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুর্নীতির বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল চাই

সময়ের সংবাদ
ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭ ৭:২২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সময়ের সংবাদ: গত ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ টিআইবি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা ২০১৬ প্রকাশ করেছে। তালিকায় বাংলাদেশ ১৭৬টি দেশের মধ্যে ১৪৫তম অবস্থানে রয়েছে। গত বছর ১৬৯টি দেশের মধ্যে ছিল ১৩৯তম। এবার নিম্নক্রমানুসারে ১৫তম, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু আফগানিস্তানের ওপরে। গত বছরও তাই ছিল। সূচকের ১০০ মানদণ্ডের মধ্যে এবার বাংলাদেশের স্কোর ২৬। গত বছর ছিল ২৫। সিপিআই সূচকে ‘০’ স্কোরকে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বলে গণ্য করা হয়। টিআইবি সংবাদ সম্মেলনে ওই তারিখেই এ তালিকা প্রকাশ করেছে। সে সময় সংস্থার কর্তৃপক্ষ অভিমত প্রকাশ করে বলেছে, ‘এবারো বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা উদ্বেগজনক।’
বাংলাদেশে দুর্নীতির যাত্রা স্বাধীনতা-উত্তর থেকেই। সাড়ে সাত কোটি মানুষ, ভিক্ষার কম্বল এসেছিল আট কোটি। তবুও বঙ্গবন্ধু তার ভাগের কম্বল পাননি, যা তিনি আক্ষেপ করে এক জনসভায় বলেও ছিলেন। আর পাবেনই বা কিভাবে? কথিত আছে, বেশির ভাগ কম্বল পাচার হয়ে ভারতে গেছে এবং সেখানে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এই অপরাধে শাস্তি হয়নি কারো। তাই রেশন কার্ডের দুর্নীতিও চরমে ওঠে। তার পর শুরু হয় একের পর এক অন্য ক্ষেত্রেও। এর রেশ ধরে অনেকে মালয়েশিয়াকে বেছে নিয়েছেন সেকেন্ড হোম হিসেবে। বড় গার্মেন্ট মালিকের বেশির ভাগই এখন বিদেশী নাগরিক। বিদেশে তারা টাকার পাহাড় গড়েছেন। বেশির ভাগ অর্থই বন্ড সুবিধায় আনা মালামাল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দেয়া থেকে অর্জিত। তারাই আবার বিদেশে টাকা পাচারে বেছে নিচ্ছেন অবৈধ হুন্ডির পথ। এসব কারণে গার্মেন্ট শিল্প মালিকেরা কর্মপরিবেশের দিকে কোনো মনোযোগ দিচ্ছেন না। হাতেগোনা কয়েকজন মালিক পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়েছেন। বাকিরা ব্যস্ত ভোগবিলাসে। সাধারণ শ্রমিকদের আর্তনাদ তাদের কানে যায় না। দিনের পর দিন এভাবেই চলছে। এ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের একটি অংশের খবর। অন্য অংশগুলোর খবরও কম-বেশি এরূপই! যা হোক, দুর্নীতির বাকি ২০ শতাংশ অন্য পেশার লোক। তার মধ্যে রাজনীতিবিদ ও সরকারি চাকরিজীবীই বেশি। অন্য দিকে এনবিআরের চেয়ারম্যান এক সভায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে বলা হয় কর ফাঁকির মৃগয়া ক্ষেত্র। দেশের অন্তত ৫০ লাখ মানুষ করের আওতায় আসার সামর্থ্যধারী হলেও মোট করদাতার সংখ্যা এর সাত-আট ভাগের এক ভাগ মাত্র। এর প্রধান কারণ হচ্ছে- আয়করযোগ্য লোকের বেশির ভাগেরই অর্থ কালো টাকা। আয়করের রিটার্নে সাদা টাকার হিসাব দিতে হয়। তাই আয়কর দেন না। আয়কর আদায় নগণ্য হওয়ার দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন জটিলতা, কিছু লোকের হয়রানি, অযথা জটিলতা সৃষ্টি ও দুর্নীতি। যা হোক, ১০ বছর আগেও দুর্নীতি হয়েছে। তবে দিনে দিনে বাড়তে বাড়তে বর্তমানে সর্বগ্রাসী অবস্থায় উপনীত হয়েছে। আর এর সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিত লোকেরাই।
এ অবস্থায় কয়েক মাস ধরে পরিলক্ষিত হচ্ছে- দুদক একটু তৎপর হয়েছে। বেশ কিছু বড় কেসের তদন্ত করছে। এর মধ্যে একটি বড় কেসের রায়ও হয়েছে। সেটি হচ্ছে- সাবেক রেলমন্ত্রী, যিনি ‘কালো বিড়াল’ বলে স্বখ্যাত, তিনি অর্থাৎ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পিএসের দুদক কর্তৃক মামলায় পাঁচ বছর জেলসহ কিছু সাজা হয়েছে। এরূপ আরো হচ্ছে। দুদক চেয়ারম্যানও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন। উপরন্তু তিনি এক ডিও লেটারের মাধ্যমে দুর্নীতি রোধে তদারক ব্যবস্থা জোরদার করা এবং সব সরকারি দফতরে দৃশ্যমান স্থানে অভিযোগ বক্স স্থাপন করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করেছেন। তৎপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ২৮-১২-২০১৬ তারিখে সব সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি অবহিত করেছেন। সূত্র প্রথম আলো, ২০ জানুয়ারি ২৯১৭। উল্লেখ্য, তিনি এর আগে এ-ও বলেছেন, যেসব দফতরে দুর্নীতি বেশি হয়, সেখানে ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরা হবে। উপরন্তু এনবিআর আয়োজিত ‘জাতীয় শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা’ শীর্ষক সেমিনারে ‘দুর্নীতি এ মুহূর্তে একটি জাতীয় সমস্যা’ আখ্যায়িত করে দুদক ও এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছেÑ ‘দুর্নীতিবাজ কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’ ব্যক্তিগত ও সরকারি দফতরে দুর্নীতির ধূসর ক্ষেত্র চিহ্নিত করার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, ‘দুর্নীতি রোধ করা গেলে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান গতিশীল হবে, দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমবে।’ এ ছাড়া দুদক চেয়ারম্যান পরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, দেশে এখন অভাবের জন্য নয়, লোভের কারণে দুর্নীতি হচ্ছে। যার খবর প্রতিদিনই গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু সব খবর প্রচারমাধ্যমের নজরে আসছে না। আসা সম্ভবও নয়। তাই অপ্রকাশ্যের সংখ্যা ও অর্থ সংশ্লিষ্টতা আরো অনেক। প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতি, দায়ের করা অভিযোগ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে অনুসন্ধান চালালে বহু দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে, তা নিশ্চিত। উপরন্তু শেয়ার কেলেঙ্কারি ও পাচার করা অর্থের বিষয়টিও দুদকভুক্ত করা দরকার।
দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বর্ণিত কিছু শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এটি ভালো লক্ষণ। সর্বোপরি সম্ভবত সরকারি চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সরকারের অনুমতি লাগার শর্তও বাতিল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সরকারি পর্যায়ে। কিন্তু তা এখনো আইনে পরিণত হয়নি। এটি শিগগিরই করা প্রয়োজন। কারণ যত তাড়াতাড়ি হবে, দেশের ততই মঙ্গল। এটি হলে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হবে। এ বিষয়টি এমপি-মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করা প্রয়োজন। অর্থাৎ দুদককে পূর্ণ স্বাধীন তথা শৃঙ্খলমুক্ত ও মহাশক্তিশালী করা দরকার। এ ছাড়া দুর্নীতির বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা আবশ্যক। বর্তমান ব্যবস্থায় সহজে দুর্নীতি বন্ধ হবে না। দুদক কর্তৃক দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পর সাধারণ আদালতে মামলা করতে হয়। আর সে মামলা অন্য সব মামলার মতো সহজে নিষ্পত্তি হয় না। কয়েক বছর, এমনকি দশকও অতিক্রান্ত হয়ে যায়। আর কথিত আছেÑ জাস্টিস ডিলে জাস্টিস ডিনাই। শেষমেশ বিচার হলেও শাস্তির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য নয়। তাই দেশের শান্তি ও সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে দুর্নীতির বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তাতে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন এবং দুর্নীতিকৃত সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ কঠোর শাস্তির বিধান করা আবশ্যক। স্মরণীয় যে, ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতের্তে ঘোষণা করেছেন, ‘দুর্নীতিবাজকে বিমানে তুলে মধ্য আকাশে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে ফেলে দেয়া হবে।’ আমরা এত নিষ্ঠুরতা চাই না। আমরা চাই বর্ণিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন। তাহলেই দুর্নীতি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে তা নিশ্চিত।
উল্লেখ্য, আমাদের দেশটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। জনগণ খুবই ধর্মভীরু। তাই বেশির ভাগই ইবাদত-বন্দেগি করেন। কিন্তু এদের মধ্যে অনেকেই হারাম রুজিও উপার্জন করেন। তাদের অভিমত হচ্ছে- হারাম রুজি খাবো পাপ হবে, আর নামাজ-রোজা করব সওয়াব হবে। পরে যোগ-বিয়োগ করে বেহেশতে যাবো। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ ইবাদতের প্রথম শর্তই হচ্ছে হালাল রুজি। গণমাধ্যমেরও কর্তব্য নির্ভয়ে দুর্নীতির খবর বেশি করে প্রকাশ করা। সর্বোপরি সাধারণ মানুষের দায়িত্ব- উগ্রবাদীদের মতো দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্যাপক সোচ্চার হওয়া। প্রয়োজনে প্রতিরোধ করা। এমনকি বর্জনও করা দরকার দুর্নীতিবাজদের। এসব বিষয় পালন করা হলে দুর্নীতি হ্রাসে ব্যাপক সহায়ক হবে তা নিশ্চিত।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।