ঢাকাসোমবার , ২৩ জানুয়ারি ২০১৭
  • অন্যান্য
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ-আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের পরিবার
  6. আলোচনার শীর্ষে
  7. কবিতা
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দোয়া প্রার্থনা
  12. নারী ও শিশু
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও
  15. মতামত বিশ্লেষণ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তিন বোনের উদ্যোগের গল্প

সময়ের সংবাদ
জানুয়ারি ২৩, ২০১৭ ৪:২১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

‘বার্গার-এ-কেল্লাফতে’ বিভিন্ন স্বাদের বার্গারের ছোট একটি দোকান। দোকানের মালিক তিন বোন। তাদের স্বপ্ন বার্গারের এ ছোট দোকান ‘বার্গার-এ-কেল্লাফতে’ একসময় সারা দেশে পরিচিত হবে। হবে দেশের সেরা বার্গার ব্র্যান্ড।

সময়ের সংবাদ:  তিনজন তরুণ উদ্যোক্তা তাদের স্বপ্ন ও ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তুলছেন একটি খাবারের দোকান। এই তিন উদ্যোক্তা তিন কন্যা নামেই পরিচিত। তারা তিন বোন। বড় বোন ফাহমিদা মিশু, মেজ বোন সাফায়েত আরা মুন আর ছোট বোন সাদিয়া আফরিন। তাদের দোকান ‘বার্গার-এ-কেল্লাফতে’। তিন বোনের এই উদ্যোগের গল্প জানতে কথা হয় তাদের সঙ্গে। দোকানের যাত্রা শুরু গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ থেকে। প্রতিদিন বেলা ১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকে। ছোট্ট পরিসরে দোকানটি হলেও সবসময় সেখানে থাকে উপচে পড়া ভিড়। ঘরোয়া পরিবেশে কম দামে টাটকা খাবার পরিবেশন আর কাস্টমারদের সঙ্গে ভালো আচরণ এই অল্প সময়ে প্রশংসিত করেছে তিন কন্যাকে। তাই ৩০/১ ঢাকেশ্বরী রোডের দোকানটি শুধু স্থানীয়ভাবেই নয় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আশেপাশে সবার কাছে। সব বয়সের মানুষই তাদের নিয়মিত ক্রেতা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি শুরুর গল্পটা বলেন বড় বোন ফাহমিদা। পড়াশোনা শেষ করে একটি বেসরকারি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অবস্থায় কিংবা পারিবারিকভাবেই চাকরির প্রতি একটা টান ছিল ফাহমিদার। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে হতাশ হয়ে যান। বোনদের ও মায়ের উৎসাহ, সহযোগিতা আর বন্ধুর অনুপ্রেরণা তাকে নতুনভাবে নিজেকে চিনতে শিখিয়েছে, তৈরি করেছে আত্মবিশ্বাস। কাজের ক্ষেত্র, পরিবেশ, সম্মান ও সব মিলিয়ে মনে হয়েছে এ পেশা তার জন্য মনোউদ্দীপক। ‘আমি আমার পছন্দের কাজ পেয়েছি, এখন এ কাজ শতভাগ উপভোগ করছি। সব সময়ই ভাবতাম আমরা একটা কিছু করব। মা ফেরদৌসী বেগম সব সময়ই আমাদের উৎসাহ দিতেন পড়াশোনা করে স্বাবলম্বী হতে। পড়াশোনা করে ছোট্ট দুই বোন। মেজো বোন সাফায়েত আরা মুন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিবিএ ছাত্রী আর ছোট বোন সাদিয়া আফরিন এসএসসি পরীক্ষার্থী। অবসর সময়ে তিন বোন বেরিয়ে পড়তেন বিভিন্ন দোকানে, রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে। এভাবেই একদিন লালবাগে বিরিয়ানি খেতে বসে মেজ বোন সাফায়েত বলেন, এখানে দোকান করলে কেমন হয়। এরপরই দোকান খোঁজা শুরু। প্রথমে সন্দেহ ছিল এই পুরান ঢাকায় কি বার্গার চলবে? সাহস করে শুরু করে দেন। বিভিন্ন স্বাদের বার্গার নিয়ে যাত্রা শুরু। দোকানের নাম সম্পর্কে সাফায়েত বলেন, কেল্লা ফতে অর্থ বাজিমাত। দোকানের নামের মতো এর পদগুলোর নামও আলাদা, বড় নবাব, ছোট্ট নাবাব, বাদশাহ কেল্লাফতে চিকেন বার্গার, চকলেট কোল্ড কফি ইত্যাদি। স্থায়ী গন্তব্য খিলগাঁও হলেও এলাকা ছেড়ে এখানে দোকান নেয়া ও ব্যবসা পরিচালনা করা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে তারা। আর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছাটাও ছিল প্রবল। নিজেকে তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে বিকাশ করার ইচ্ছা ছিল। সেই ভাবনা থেকে তিন বোন নিজেদের সঞ্চয় দিয়ে এ দোকান শুরু করেছেন। কোনোরকম অর্থনৈতিক সাহায্য তারা পরিবারের কারো কাছ থেকে কিংবা কোনোভাবে বাইরে থেকে ঋণ নিয়ে করেননি। এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সদস্য এসএসসি পরীক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন তার জমানো পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসায় শরিক হয়েছেন। পড়াশোনার ফাঁকে নিয়মিত সাদিয়া বড় দুই বোনের সাথে দোকানের কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। সাদিয়া বলেন, বড় আপু (ফাহমিদা মিশু) তার মেধা, জ্ঞান, আর মমতা দিয়ে আগলে রেখেছেন আমাদের ও আমাদের এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে। অংশীদার হিসেবে তারা বাইরের কাউকে নেননি। নিজেদের মধ্যে যে বিশ্বাস আর নির্ভরতার সম্পর্ক তা বাইরের কারো সাথে হয় না। দোকান পরিচালনা, খাবার তৈরি ও পরিবেশনের কাজও তারা নিজেরাই করেন। তিন বোনের জমানো টাকা, অক্লান্ত পরিশ্রম, মায়ের সমর্থন আর একান্ত শুভাকাক্সক্ষী এক বন্ধুর অনুপ্রেরণা আর অদম্য স্বপ্ন নিয়ে গড়ে তুলেছেন বার্গার-এ-কেল্লাফতে নামে এই দোকানটি। আর স্বপ্ন দেখেন একসময় এটিই হবে ঢাকার সবচেয়ে নামী খাবারের দোকান। দেশের নানা জায়গায় শাখা থাকবে তাদের। দেশের সেরা বার্গার ব্র্যান্ড হতে চান তারা। প্রতি মুহূর্তেই তারা প্রতিযোগিতা করছেন নিজের সাথে, নিজের কাজের সাথে। নিজেদের কাজ সম্পর্কে ফাহমিদা মিশু বলেন, কোনো কাজই ছোট নয়। সব কাজের গ্রহণযোগ্যতা যেমন সমান তেমনি সব পরিসরের কাজেই নিজেকে তুলে বা যোগ্যতা প্রমাণ করার সুযোগ থাকে বিস্তর। কাজের পরিবেশ বলতে মিশু মনে করেন, সময় অনেক এগিয়েছে। এখন ছেলে বা মেয়ে বলে ঘরে বাইরে কোনো ভিন্ন কথা নেই। সবাই যেমন স্বাধীন তেমনি সমান পরিশ্রমী। কাজের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয় অতঃপর সে পরিবেশে নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে হয়। কাজ ও কাজের প্রতি সম্মান এবং দক্ষতা এগিয়ে নিয়ে যায় সবাইকে। আর অনুকূল ও প্রতিকূলতা সেটা সময়ের স্রোত। কখন কী করতে হবে তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে। নিজের বুদ্ধি ও বিবেচনা কাজে লাগিয়ে কাজ করতে হয়। জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে সময়। যার যথাযথ ব্যবহারে একজন মানুষ সফল মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে চলে, সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা পালনের সুযোগ করে দিতে পারে। সেই সাথে নিজের সাথে বোঝাপড়া করতে হবে সে কী হতে চায় অথবা নির্দিষ্ট একটা সময়ে সে নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চায়। নারী সর্বপ্রকার প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। নারী অন্যকে যেমন প্রেরণা দেয় ঠিক তেমনি নিজ শক্তির বলে আজ ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে বিজয়ের স্বাক্ষর রাখছে। যেমন আমাদের মা (ফেরদৌসী বেগম) আমাদের প্রেরণার উৎস। আমাদের মধ্যে স্বপ্নের বিজ বুনেছেন আমাদরে মা। আর আমরা আমাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে একান্ত মমতা, ভালোবাসায় তাকে লালন করছি। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এখানে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়া। সমাজের প্রতিষ্ঠিত নারী যারা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখেছেন তাদের কথা শুনে ও গল্প পড়ে আমরা অনুপ্রাণিত হয়েছি, ঠিক তেমনি নিজেদের প্রচেষ্টায় সমাজে আমরা তিন বোনও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।