* মাইডাস ইনভেস্টমেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী
সময়ের সংবাদ: আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ জন্য আরও কিছু পরিবর্তন আনা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। অবশ্য কীভাবে পুঁজিবাজার শক্তিশালী হবে, কী কী পরিবর্তন দরকার তা তিনি বিস্তারিত উল্লেখ করেননি।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল রোববার অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
আবুল মাল আবদুল মুহিত পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে আসেন কর্মবাজারে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে। তিনি বলেন, তিনি যখন প্রথম অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তখন একটি প্রতিষ্ঠানে নারী কর্মী ছিল মোট কর্মীর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। এখন সেটা কমপক্ষে ৩০ শতাংশ হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এর সুফলও আমরা পাচ্ছি। ২০ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কখনো ৬ শতাংশের কম হয়নি। এ রকম রেকর্ড খুব কম দেশেরই আছে। আমরা যেভাবে চলছি, তাতে আরও কিছু পরিবর্তন করতে পারলে ২০২০ সালের মধ্যে অনেকগুলো নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’
নতুন দিগন্ত কোন কোন খাতে উন্মোচিত হবে, তার একটি উদাহরণই দেন অর্থমন্ত্রী। সেটি পুঁজিবাজার। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ২০২০ সালের মধ্যে আমাদের এখানে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার সৃষ্টি হবে। যেখান থেকে আমরা বিভিন্ন বিনিয়োগে আগ্রহ নিতে পারি। হ্যাঁ, মাত্র তিন বছর বাকি। এ তিন বছরেই হবে বলে আমার বিশ্বাস। এরপর আমরা একটা অন্য পর্যায়ে চলে যাব।’
বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি নামে ডাকা প্রসঙ্গে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এ কথাটি হেনরি কিসিঞ্জার বলেননি। বলেছিলেন তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি অ্যালেক্সিস জনসন। জনসন কিসিঞ্জারের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এগোচ্ছে তাতে দেশটি একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে। তখন কিসিঞ্জার বলেন, হলেও সেটা আমেরিকার ঝুড়ি হবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘উক্তিটি যথাযথ। বাংলাদেশ কখনো আমেরিকার ঝুড়ি হয়নি। বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগিতায় আমেরিকা নেতৃত্ব দেয়নি। উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর একটি আমেরিকা।’ তিনি বলেন, আমেরিকা বরং পাকিস্তানের গডফাদার। পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার যে সম্পর্ক ছিল তার অর্ধেকও বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল না। পাকিস্তানই তাদের ঝুড়ি ছিল। কারণ, পাকিস্তানকে তাদের দীর্ঘ সময় খাদ্য সহায়তা দিতে হয়েছিল।
মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স অ্যান্ড সার্ভিসেস (মাইডাস) ১৯৮২ সালে একটি বেসরকারি সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই এটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দিত। পরে মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত। নতুন করে প্রতিষ্ঠিত হলো মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রোকিয়া আফজাল রহমান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, শুরু থেকেই মাইডাসের লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন। ঋণ দিতে গিয়ে দেখা গেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং নারী উদ্যোক্তারা ঋণ নিয়ে দায়িত্বশীলভাবে ফেরত দেন। যেটা বড়দের মাঝে কম দেখা যায়।
মাইডাস ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল আজম বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট গঠন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মাইডাস ইনভেস্টমেন্টের চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের পরিচালক এম হাফিজ উদ্দিন খান ও মো. শামসুল আলম, মাইডাসের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অঞ্জন চৌধুরী, পারভীন মাহমুদ, সাবিনা আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিমসহ মাইডাস, মাইডাস ফাইন্যান্সিং, মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট এবং বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।