গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে তাড়াশে ১৫০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করার নির্দেশ থাকলেও এই ১৫০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করতে পারেনা নতুন প্রজন্ম। ফলে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ থেকে। তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে না উঠায় গুরুত্ব হারাচ্ছে এ দিবসটি।
একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনটিতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয় সর্বস্তরের মানুষ। দুই-চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঁশ, কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। কিছু প্রতিষ্ঠান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে জাতীং পতাকা উত্তোলন ও দোয়া খায়ের করে থাকেন।
প্রসঙ্গত: উপজেলার গুল্টা বাজারে একই স্থানে পাশাপাশি গুল্টা আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুল্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুল্টা আদিবাসী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গুল্টা বাজার ্িদ্ব-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়, গুল্টাবাজার শহীদ এম. মনসুর আলী ডিগ্রী কলেজ মিলে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ জনবহুল এলাকা হওয়ার পরেও এখানে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কোন শহীদ মিনার নেই।
তাড়াশ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যাক্ষ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জেনারেল এবং কারিগরি মিলে ১০টি কলেজের কেবল মাত্র ২ টিতে শহীদ মিনার নাই। তবে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ এবং বাংলা ভাষা চর্চার গুরুত্ব অনুধাবন করতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার তৈরি জরুরী।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন বলেন, ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে মাতৃৃভাষার জন্য যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মরণে আজও ৫৪টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৩০টিতে শহীদ মিনার নাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা দরকার।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের ১৩৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৮ টিতে শহীদ মিনার নাই। তৃণমূল পর্যয়ে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা প্রয়োজন।
বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান খান বলেন, বাংলা ভাষার সঠিক ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে এবং ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবদনে উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে তাগিদ দেওয়া হয়েছে, যেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সহয়তা নিয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়।