গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশের ঐতিহ্যবাহী হাটগুলোর পেরিফেরি (সীমানা) ভুক্ত সম্পত্তির অবৈধ দখল নিয়ে ধান্দাবাজির ঘর তুলে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সময় সুযোগ বুঝে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে কামিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। অনেকে আবার বছরের পর বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন। পেরিফেরি জায়গায় ধান্দাবাজির ঘর থাকায় স্থান সংকটে দোকানীরা বসতে পারছেন না। ফলে বেচা-কেনা কমে শত বছরের পুরানো হাটগুলো ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর সরকার হারাতে বসেছেন কোটি-কোটি টাকার রাজস্ব। ব্যবসায়ী এবং হাটের ইজারাদাররা পেরিফেরি ভুক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখল মুক্ত করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে উপজেলার নওগাঁ হাট, উলিপুর হাট, বিনসাড়া হাট, গুল্টা হাট, রানীর হাট, মাধাইনগর হাট, বারুহাঁস হাট ঘুরে হাট এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাটগুলোর পেরিফেরি (সীমানা) ভুক্ত সম্পত্তিতে প্রভাবশালীরা প্রায় দুই শতাধিক পাকা-আধাপাকা এবং টিনের তৈরি দোকান ঘর তুলে রেখেছেন। হাট পেরিফেরি জায়গায় স্থায়ী স্থাপনা অবৈধ হলেও ধান্ধাবাজির দোকান ঘর নির্মাণ করে সময় সুযোগ বুঝে গোপনে হাত বদল করে কামিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
অনেকে আবার বছরের পর বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছেন। প্রতিবছর এসব হাট ইজারা দিয়ে সরকারের রাজস্ব আসে কোটি কোটি টাকা। অথচ উপজেলা পরিষদ বা স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে হাটগুলোতে পরিকল্পিতভাবে দোকান নির্মাণ ও হাট উন্নয়নের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। একটি হাটেও কোন ছাউনি নেই। ক্রেতা-বিক্রেতারা বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে আর সুষ্ক মৌসুমে রোদে পোড়ে। অধিকাংশ হাটে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই। প্রয়োজনের তুলনায় পানীয় নলকূপের সংখ্যা খুবই নগন্য। আর গণশৌচাগার নেই বললেই চলে।
হাটগুলোর পেরিফেরি (সীমানা) ভুক্ত সম্পত্তিতে ধান্দাবাজির ঘর থাকায় দোকানীরা বসে পড়েন অন্যের জমার জায়গা আর পতিত জমির মধ্যে। আবার স্থান সংকটে ফিরে চলে যায় দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেক দোকানি। বেশিরভাগ হাটের সঙ্গের পাকা সড়কের ওপর দিনভর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে চলে বেচা-কেনা ও মালামাল লোড আন লোডের কাজ। হাটগুলোতে সপ্তাহে দু’দিন পাকা সড়কের দু’ধারে হাট বসায় যাতায়াতকারী লাখো মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে ।
অভিযুক্ত আনছার আলী, জামাল হোসেন, গনি মিঞা, ফজর আলী জানান, সরকারের নির্দেশনা পেলে ঘর ভেঙে হাট পেরিফেরি ভুক্ত সম্পত্তি দখল মুক্ত করে দেব।
ইজারাদার মো. আব্দুস সালাম (ভুট্র) জানান, শুধু বিনসাড়া হাটেই ৪৪টি ধান্দাবাজির ঘর রয়েছে। হাট পেরিফেরি ভুক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ মনসূর উদ্দিন বলেন, শিগগিরই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও হাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস. এম. ফেরদৌস ইসলাম বলেন, উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে হাট পেরিফেরি ভুক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখল মুক্ত করা হবে।