গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
লাগাতার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চলনবিল অধূষিত তাড়াশের ইরি-বোরো চাষিরা। রবিবার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে বিক্ষোপ মিছিল করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন শতাধিক চাষি। এরআগে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আরশেদ আলী দিনভর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখেন। শনিবার সরকারি ছুটি বাতিল ঘোষণা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস। যত্র তত্র ফসলি জমিতে পুকুর খনন, ব্রিজ-কালভাটের মুখে মাটি এবং জলাধার ভরাটের কারণে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গত ছয় দিনের বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাশে পাকা ধানে মই পড়ার অবস্থা হয়েছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি ও ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্খা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় মিনিকেট জাতের ধান বৃষ্টি আর বাতাশে নুয়ে পড়ায় তা মাটি আর মানিতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। কৃষি নির্ভর কৃষকরা না পারছেন ধান কাটতে না পারছেন কাটা ধান শুকাতে। রোদ না উঠায় বাড়ির উঠানে ও জমিতে কাটা ধান পচে নষ্ট হচ্ছে।
কৃষক, শাহালম, এসহাক আলী, আব্দুল লতিফ, হান্নান প্রামানিক, লাবু ইসলাম, জালাল উদ্দিন, সুবাস এক্কা জানান, এ বছর বাম্পার ফলনের বুকভরা আশায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে মনে হয় তা পূরণ হবেনা। এলাকাজুড়ে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিগগিরই ব্রিজ-কালভাট ও জলাধারের মাটি অপসারণ করা না হলে তলিয়ে যেতে পারে সুনামগঞ্জের হাওরের মত তাড়াশের পাকা ধান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ২শ’ হেক্টর। চাষ করা হয়েছে লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও ১শ’ হেক্টর বেশি। সম্ভাবনা রয়েছে বাম্পার ফলনের। তবে বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্ট স্থানগুলো থেকে স্ব-স্ব এলাকা ভিত্তিক চাষিদের মাটি সরানোর জন্য বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আরশেদ আলী জানিয়েছেন, পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসকে দ্রুত পানি প্রবাহের পথগুলো বাধামুক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।