গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
সিরাজগঞ্জ তাড়াশের ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী মোরশেদ (৪৮) কৌশলে মানুষ ঠকানোর কারীগড়। সে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পেঙ্গুয়ারী গ্রামের মৃত ফরজ আলী ছেলে। অনেকের কাছে মাছের ব্যবসার কারণে জাইলা মোরশেদ নামে পরিচিত।
এলাকাবাসী ও প্রতারিতদের সূত্রে জানা যায়, মোরশেদ প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রথমে কিছু মানুষ টার্গেট করে নিবীড়ভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। এরপর পারিবারিক যাতায়াতের মাধ্যমে সেই সম্পর্ক আরো বিস্বস্ত করে। এক পর্যায়ে নিজের মাছ চাষের কয়েকটি পুকুরের সাথে অন্যদের বেশকিছু পুকুরও দেখিয়ে নিজেকে বড় মাছ ব্যবসায়ী ও টাকাওয়ালা হিসেবে প্রমাণ করে। এরপর সুযোগমত বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, কাউকেবা পুকুর ব্যবসার পার্টনার বানানেরা কথা বলে জরুরী ভিত্তিতে মোটা অংকের টাকা চাইতো।
প্রতারণায় তাকে সহায়তা করতো তারই একমাত্র ছেলে ফারুক হোসেন (২৩)। কেউ টাকা দিতে আপত্তি করলে ফারুক তার বাবার অবর্তমানে সব টাকার দায়দায়িত্ব নেবে বলে নির্ভয় দিত। এভাবে উপজেলার বেশকিছু মানুষের নিকট থেকে প্রায় পঁঞ্চাশ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে বর্তমানে বাপ-ছেলে দু’জনেই পলাতক।
প্রতারিতদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তাদের একজন একই ইউনিয়নের বিনসাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী (৪৬) জানান, মোরশেদ তার অতি নিকটবর্তী পাশের গ্রামের প্রতিবেশি। মাত্র তিন মাসের সম্পর্কে বস্তুল গ্রামের কুমার দিঘী পুকুরটি আমাকে লিজ নিয়ে দেবে বলে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি ৫টি কন্যা সন্তানের বাবা। খেয়ে-না খেয়ে দু’টো মেয়ের বিয়ে দিয়েছি । আমার নিজের চেক জমা দিয়ে সিরাজগঞ্জ রোডের দাদন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে দুইলক্ষ টাকা এনে প্রতারক মোরশেদকে দিয়েছি।
আরেকজন তালম ইউনিয়নের তেঘড়ি গ্রামের হেলাল উদ্দিন জানান, মোরশেদ পুকুর ব্যবসার সুবাদে আমাদের গ্রামে আসত। এখানে তার মাছ চাষের কয়েকটি পুকুর ছিল। একপর্যায়ে আমার বাড়িতে এসে কৌশলে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। এর কিছুদিন পর পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষে অনেক লাভ দেখিয়ে ব্যবসার পার্টনার বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনলক্ষ পঁঞ্চাশ হাজার টাকা নেয়। এর কিছুদিন পর থেকেই সে উধাও।
বর্তমানে বাড়িতে তার স্ত্রী এবং ৯ বছরের শিশু কন্যা রয়েছে। তবে তাদের সাথে নাকি কোন ধরনের যোগাযোগ হয়না বলে জানান তার স্ত্রী। মোরশেদ ও ফারুকের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ব্যবহিত ৩টি নম্বর (০১৭৬১-৫২১৫৫৫, ০১৭১৯-৭০৮৩৮১, ০১৯৫৩-২৮১০১১)বন্ধ পাওয়া গেছে।
ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসীর আশঙ্খা মোরশেদ ও তার ছেলে ফারুক বাংলাদেশের যেখানে থাকবে সেখানেই কৌশলে মানুষের সাথে প্রতারণা করবে। প্রতারক বাপ-ছেলের সন্ধান পেলে ০১৭১৩-৭৯১৫২৯ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হল।
বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাড়াশ থানা অফিসার ইন্চার্জ মো. মনজুর রহমান বলেন, গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।