সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হতদরিদ্র পরিবারের এতিম তিন কন্যার বিয়ে হয়ে গেল। (৬ মে) শুক্রবার সন্ধায় পাতা নামের এতিম কন্যাটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের ধামাইচ ইশ্বরপুর গ্রামের আহাম্মাদের ছেলে মো. রাসেলের সাথে। এর আগে বিয়ে হয়েছে মীম ও লতার। ফেরদৌস হোসেন নামে একজন স্থানীয় ব্যক্তি তাদের বিয়েতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেজন্য এরুপ বিয়েকে ‘মানবিক বিয়ে’ বলে উল্লেখ করেছেন এলাকাবাসী। তিন কন্যার বাড়ি মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের মাগুড়া মুকন্দ গ্রামে। তাদের বাবার নাম মৃত আব্দুল মান্নান।
মীম, লতা ও পাতার দাদী জবেদা খাতুন (৬৫) বলেন, আমার তিন নাতনির বাবা যখন মারা যায় তখন মীমের বয়স ১০ বছর। জমজ দুই বোন লতা ও পাতার বয়স ৮ বছর। বাবা মারা যাওয়ার চার মাস পরে তাদের মা রেহেনা খাতুন আমার কাছে তার চার কন্যাকে রেখে ঢাকায় চলে পাড়ি জমান। তার পর থেকে আমি ও আমার স্বামী মানুষের দুয়ারে হাত পেতে এই তিন নাতনিকে বড় করেছি।
মাগুড়া মুকন্দ গ্রামের দুইজন গ্রাম প্রধান মোজামেল হোসেন ও সাদ্দাত হোসেন বলেন, মৃত আব্দুল মান্নানের চার কন্যাকে তাদের দাদা সোলায়মান ফকির ও দাদি জবেদা খাতুন সীমাহীন কষ্টে বড় করেছেন। এরপর আনুসাঙ্গিক ব্যয়ের অভাবে বিয়ে দিতে পারছিলেননা। শেষমেশ মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন একই গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সাকাওয়াত হোসেনের ছেলে ফেরদৌস হোসেন।
জানা গেছে, বিয়ের কথা বার্তা শুরু হলে ফেরদৌস হোসেন বড় পক্ষের খোঁজ খবর নেন। তারপর বিয়েতে সহায়তা করেন। এর আগে যাদের বিয়ে দিয়েছেন তারা বর্তমানে খুব সুখে আছেন স্বামীর সংসারে।
সরজমিনে দেখা যায়, বিয়ে বাড়িতে সাউন্ড বক্সে বিয়ের গান বাজছে। মানবিক এ বিয়েতে প্রতিক‚ল আবহাওয়ার মধ্যে প্রতিবেশীর উঠানে পরিপাটি করে ছামিয়ানা টাঙ্গিয়ে বরযাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে বড় পক্ষ ও কনে পক্ষের শতাধিক মানুষজন একসঙ্গে বসে খাচ্ছেন।
ফেরদৌস হোসেন বলেন, মীম, লতা ও পাতা সহায় সম্বলহীন তিন বোন। সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রামের একটি ঘরে তারা বসবাস করেন। আমি মানবিক দিক থেকে তাদের বিয়েতে সহায়তা করেছি। মৃত আব্দুল মান্নানের জীম (৬) নামে আরো এক কন্যা রয়ে গেল। বড় হলে তাকেও বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।