গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
তাড়াশ থানায় পরিবহন সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। একটির ধাক্কা না দিলে ইঞ্জিন চালু হয়না। আরেকটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে থাকে বেশির ভাগ সময়। যে কারণে পুলিশ সদস্যদের আসামি ধরতে যাওয়া, আসামিদের কোর্টে প্রেরণ এবং নিয়মিত টহল জোরদার করতে অটো রিক্সা, সিএনজি বা ঝুঁকিপূর্ণ ভটভটি ব্যবহার করতে হয়। উপ-পরিদর্শকরা ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল। এ থানায় যানবাহন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অপরাধ দমন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। যার পরিণতি সাধারণ জনগণকে হতাশাগ্রস্থ করে তুলেছে। অপরাধীদের গ্রেফতার ও মামলার তদন্তকাজ সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ায় মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েে দখা দিচ্ছে জনমনে সংশয়। তাছাড়া পুলিশ সদস্যদের জীবনও রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। তাদের ফিটনেসহীন গাড়ি পথচারী বা অন্য গাড়িচালকদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বছরের ১ নভেম্বর তাড়াশ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হক গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে খালকুলা নামক স্থানে পেছনে থাকা তাড়াশ থানার পুলিশ পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দিলে সবাই প্রাণে বেঁচে গেলেও দুমরে মুচরে যায় এ্যাম্বুলেন্সটি।
বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে তাড়াশ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ২৯৭.২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের তাড়াশ উপজেলার ২৫২ টি গ্রামের প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয় পুলিশ প্রশাসনকে। এসব এলাকায় মাঝে মধ্যেই নারী নির্যাতন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধসহ সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে থাকে। এছাড়া মহাসড়কে ডাকাতি, মাদকদ্রব্য চোরাচালান এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সারাক্ষণ তটস্থ থাকতে হয় পুলিশকে।
নিয়মিত সান্ধকালীন পেট্রোল ডিউটি করতে হয় হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের তাড়াশ অংশে এবং দুর্গম ব্যারখালি ও নিমগাছি সড়কে। থানায় প্রতিমাসে ১৪০ থেকে ১৫০ টি সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি গড়ে ১৮ থেকে ২০ টি মামলা হয়। মাঝ মধ্যেই পারাপার করতে হয় ভিভিআইপি। অথচ পরিবহন সংকটের কারণে দায়িত্ব পালন করতে নানা বিরুপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় পুলিশ সদস্যদের। মামলার তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হিমশিম খায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশরা। অনেক সময় পুরানো আর ভাঙাচোরা গাড়ি নিয়ে ভিভিআইপি প্রটেকশান দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনা। কখনওবা ডিউটি স্থলেই বিকল হয়ে যায় পড়ে থাকে পিকআপগুলো। তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগসহ বিভিন্ন ফোরাম ও রাজনৈতিক জনসভায় তাড়াশ থানার পুলিশ পিকআপ সংকটের কথা তুলে ধরা হলেও এখন পর্যন্ত সমাধানের কোন আশ্বাস মেলেনি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, হেডকোয়াটার থেকে পুলিশ পিকআপ পেলে তাড়াশ থানায় দেওয়া হবে।