ধুনটে বিভিন্ন রাস্তায় স্পিড ব্রেকারে দীর্ঘদিন কোনো রং বা সাংকেতিক চিহ্ন না থাকায় প্রায়ই ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। সাধারণত সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে স্পিড ব্রেকার দেওয়া হয়। এক্ষত্রে কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিত ভাবে স্পিড ব্রেকার তৈরি করায় ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এরই মধ্যে ব্যক্তি উদ্যোগে যত্রতত্র স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য স্পীড ব্রেকার। যার কারণে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হচ্ছে।
স্পিড ব্রেকারগুলোর আগে পরে নেই কোন প্রতিকী চিহ্ন, লেখা নেই কোন সতর্কবানী। এমনকি রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়নি ওই স্পিড ব্রেকারগুলো। কিছু কিছু স্পিড ব্রেকার এতো উঁচু যে, এগুলোর উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর সময় বেশ জোরে ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়, যানবাহনের নীচে স্পিড ব্রেকার লেগে যায়।
এ নিয়ে প্রায়ই ড্রাইভারদের সাথে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি ও বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব রাস্তায় যাতায়াতকারী রোগী ও শিশুরা ঝাঁকুনিতে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পোয়াতিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জীবনের ঝুকিতে পরেছে। সড়কের পাশে কেউ নতুন বাড়ি নির্মাণ করলে সেখানে দেয়া হয় একটি স্পিড ব্রেকার। আর হাট-বাজার, দোকান থেকে শুরু করে চা দোকানের সামনে অবাধে স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
অনেক সময় বিভিন্ন মাহফিল ও মসজিদ নির্মাণের নামে পাকা সড়কের ওপর ইট ও মাটি দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করে গাড়ির পথরোধ করার চেষ্টা করছে অসচেতন মহল। সোহেল রানা নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, উঁচু স্পিড ব্রেকারগুলোতে গাড়ির গতি কমিয়ে উঠার চেষ্টা করলে গাড়ি স্পিড ব্রেকারের ওপর উঠতে চায়না। তাই বাধ্য হয়ে জোরে চালিয়ে উঠতে হয়ে। মাঝেমধ্যে ওই স্পিড ব্রেকার গুলোতে উঠতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা।
স্থানীয়রা জানান, অপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত এই স্পিড ব্রেকারগুলোর কারণে সাইকেল, ভ্যান, মোটরসাইকেল চালকরাও সমস্যায় পড়েছেন। প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সাধারণত দুর্ঘটনা কমাতে সড়কে স্পিড ব্রেকার (গতিরোধক) তৈরী করা হয়। সেগুলোও আবার নির্দিষ্ট দূরত্বে, সেই সঙ্গে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতেই স্থাপন করা হয়। কিন্তু উপকারী স্পিড ব্রেকার অনেক সময় ক্ষতিও করে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, সড়ক মেরামত করার সময় স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়ির সামনে স্পিড ব্রেকার দিতে বাধ্য করে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে সড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সড়কে স্পিড ব্রেকার দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কারণে যত্রতত্র সড়কে স্পিড ব্রেকার দিতে তারা বাধ্য হয়। সিএনজি চালক আতিকুল ইসলাম মটু বলেন, ‘স্কুল, মাদরাসা, মসজিদের সামনে গতিরোধক দরকার।
তবে বাসা ও দোকানের সামনে এত গতিরোধকের দরকার নেই। তা ছাড়া সব গতিরোধক সাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করে দিলে ভালো হতো। কিছু কিছু গতিরোধক চলন্ত অবস্থায় বোঝা যায় না। এতে আমাদের সমস্যা হয়। গাড়ি ভর্তি যাত্রী থাকলে গতিরোধক পার হওয়ার সময় ঝাঁকি লাগে। নির্দিষ্ট জায়গায় গতিরোধক থাকলে যানবাহন চলাচলে সুবিধা হয়।আবার দুর থেকে আসা চালকরা রাস্তা অপরিচিত হওয়ার কারনে কোথায় স্পিড ব্রেকার আছে তা তারা বুঝতে পারেনা।
এর ফলে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, এ বিষয়ে আমি সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলবো, যাতে শীঘ্রই স্পিড ব্রেকারগুলোতে রঙ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। জনস্বার্থে যেখানে স্পিড ব্রেকার প্রয়োজন শুধু সেখানেই স্পিড ব্রেকার থাকবে। বাকি সব স্পিড ব্রেকার অপসারণ করা যায় কিনা এ ব্যাপারে আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করবো।