শুভ মহালয়া আজ। দেবীপক্ষ ও শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্য লগ্নের শুরু। হিন্দু শাস্ত্রমতে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া নামে পরিচিত। মহালয়া শব্দের আক্ষরিক অর্থ ‘আনন্দ নিকেতন’।
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আগমনী সুর বাজবে এদিন থেকে। শাস্ত্রমতে মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গা দিনটিতে মর্ত্যলোকে পা রাখছেন।
হিন্দু পুরাণমতে, অশুভ অসুর শক্তির কাছে দেবতারা যখন পরাভূত এবং স্বর্গলোক চ্যুত তখন চারদিকে শুরু হয় অশুভ শক্তির প্রতাপ। একপর্যায়ে সেই অশুভ শক্তিকে পরাভূত করতে একত্রিত হন দেবতারা। এ সময় দেবতাদের তেজ রশ্মি থেকে আবির্ভূত হন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহালয়ায় থাকে ঘোর অমাবস্যা। দুর্গা দেবীর তেজের আলোয় সেই অমাবস্যা দূর হয়ে শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠা পায়।
বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী মহালয়ার পরে শুরু হয় দুর্গ পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মধ্যে কিছুটা অনাড়ম্বরভাবে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা।
মহালয়া শেষে আগামী ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে। এরপর ২৩ অক্টোবর শুক্রবার মহাসপ্তমী, ২৪ অক্টোবর শনিবার মহাষ্টমী, ২৫ অক্টোবর রবিবার মহানবমী এবং ২৬ অক্টোবর সোমবার বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি হবে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পূজামণ্ডপগুলোতে চণ্ডী পাঠ ও পূজা অর্চনা মাধ্যমে দুর্গা দেবীকে আহ্বান করা হবে। এ উপলক্ষে জাতীয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঘট স্থাপন, চণ্ডীপাঠ, পূজা অর্চনা ও আরাধনা অনুষ্ঠিত হবে। সকল অনুষ্ঠান হবে সীমিত আকারে এবং সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার শুধু পূজা অর্চনার মাধ্যমে মহালয়ার অনুষ্ঠান সূচি পালন করা হবে। করোনার ঝুঁকি কমাতে ভক্তদের মন্দিরে আসতে আমরা নিরুৎসাহিত করছি।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে আসন্ন দুর্গাপূজা উদ্যাপনে আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরতির আয়োজন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনার পাশাপাশি পূজা অর্চনার সকল কার্যক্রম স্বাস্থ্য বিধি মেনে পালনসহ প্রতিমা বিসর্জনে শোভাযাত্রা করা যাবে না বলে ২৬টি নির্দেশনা দিয়েছে পূজা উদ্যাপন পরিষদ।