গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
নার্গিসের সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। জন্মগত প্রতিবন্ধী অসুস্থ স্বামী আর এক মেয়েকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে কোনভাবে দিন কাটত তার। ছাগল পালন করে হতদরিদ্র সেই নার্গিস খাতুন এখন ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। পাঁচ বছর আগে স্বজনদের দেওয়া ২টি ছাগল দিয়ে শুরু করে বর্তমানে ৩১টি ছাগল রয়েছে তার। এসব ছাগলের আনুমানিক বাজার মূল্য ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তার সাফল্য দেখে এলাকার অন্যরাও ছাগল পালনে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।
নার্গিস খাতুন (৪৫) জানান, নয় বছর আগে তিনি সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানার হরিনাথপুর বাজার এলাকা থেকে তাড়াশে আসেন। তাড়াশে তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে তালম ইউনিয়নের রাণীহাট জঞ্জালী পাড়া এলাকায় সরকারি রাস্তার ধারে ছোট্র একটি বসতঘর তুলে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। ওই সময় তার শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বামী মো. আব্দুল মজিদ (৫০) রাজ মিস্ত্রীর কাজ করতেন। হঠাৎ নার্গিসের স্বামী টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় সংসার নিয়ে ভূমিহীন নার্গিসের অতি মানবেতর জীবনযাপন। নার্গিসের দুরাবস্থা দেখে তার এক বোনের ছেলে এবং সতিনের মেয়ে ২জন ২টি বাচ্চা ছাগল কিনে দেন। সেই দুইটি ছাগল দিয়ে নার্গিস শুরু করে তার ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা।
নার্গিস আরো জানান, তার স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর সংসারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। অসুস্থ স্বামী আর এক মেয়েকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে কোনভাবে দিন কাটত। তবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছা ছিল তার। ২টি ছাগল দিয়ে লালন-পালন শুরু করে বর্তমানে খাসি এবং পাটি মিলে উন্নত জাতের ৩১টি ছাগল রয়েছে। আর সঙ্গে রয়েছে বাচ্চা ছাগল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ছাগল পালন করে প্রতিবছর তার সংসারে আয় হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তার সাফল্য দেখে এলাকার অন্য লোকজনও ছাগল পালনের দিকে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু হানিফ জানান, স্বাবলম্বী হওয়ার সহজ উপায় ছাগল পালন। নার্গিসের প্রশিক্ষণ, ছাগলের ঔষধ বিনামূল্যে প্রাণী সম্পদ অফিসের মাধ্যমে দেওয়া হবে।