গোলাম মোস্তফা, নিজস্ব প্রতিবেদক, সময়ের সংবাদ:
পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার শেষ হয়েছে তাড়াশের ঐতিহাসিক শিব মেলা। উপজেলার তালম ইউনিয়নের তালম গ্রামে শ্রী শ্রী শিব মন্দির প্রাঙ্গনে শিব চতুর্দশী উপলক্ষ্যে অতি প্রাচিনকাল থেকে প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের শুরুতে তিন দিনব্যাপী শিব মেলার আয়োজন করে থাকেন তালম সার্বজনীন শিব মন্দিরের দীন ভক্তরা।
কথায় আছে “বিল দেখোতো চলন, শিব দেখোতো তালম”। দেশের বৃহত এই শিবটি একনজর দেখতে ও মনোষ কামনা পূরণের আশায় ঠাকুরের রাতুল চরণে পূজা-অর্চনা দিতে মেলার তিন দিনে এখানে আনাগোনা হয় প্রায় আট থেকে দশ হাজার মানুষের। দেশের গন্ডি পেরিয়ে পার্শ¦বর্তী ভারত, ভুটান ও নেপাল থেকেও দর্শনার্থী আসেন এ মেলায়। জাতী, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয় তালমের শিব মেলা।
শিব মন্দিরের নিয়মিত পূজা অর্পণকারী শতবর্ষী রুপচাঁদ এক্কা জানান, তাদের ধারণা দুনিয়া সৃষ্টির সময় থেকে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় এই শিব প্রতিক এখানে রয়ে গেছে। তাইতো শুধু মেলাতেই নয়, বছর জুড়ে দেশ-বিদেশের বহু মানুষ এখানে আসেন একনজর শিবটি দেখতে।
অন্যদিকে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের চৌপাকিয়া গ্রামের প্রাচীন শিব বিগ্রহ স্থানে এবারও আনন্দ মুখর পরিবেশে শিবরাত্রি উদযাপন হয়েছে। বুধবার রাতভর সংকীর্তন, শিবের মাথায় দুধ ও জল ঢালা, ভোগ-পূ¯পাঞ্জলি দান, মুর্হুমুহু ললনাদের ঊলুধবনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারদিক। সন্ধ্যায় চৌপাকিয়া শ্রী শ্রী শিব বিগ্রহ সেবক কমিটির সাধারণ স¤পাদক সাংবাদিক দীপক কুমার কর উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। কমিটির সহ সভাপতি শিবভক্ত পলাশ চন্দ্র শিংয়ের নেতৃত্বে শুরু হয় সংকীর্তন। অংশ গ্রহন করেন কমিটির সদস্য শ্যামল শিং, রঞ্জিত শিং, বিষ্ণু শিং, বিরেন শিং, বিরেশ শিং, বিভিষণ শিং, শরৎ শিং, সুকুমার শিং, বুধু শিং ও গোপাল কর্মকারসহ খোলাবাড়িয়া, নওগাঁ ও হাসানপুর গ্রামের শিবভক্ত নর-নারী। শিবের মাথায় দুধ ও জল ঢালাসহ পূ¯পাঞ্জলি দান করেন কমিটির সদস্য শ্রীমতি মঞ্জু রাণী কর, শ্রীমতি চামেলী রাণী কর, অমলা রাণী দেব, লক্ষ্মী বালা বসাক, কুলবতী রাণী, মায়া রাণী, অঞ্জলি রাণী, বিষ্ণু রাণী, প্রিয়াঙ্কা রাণী প্রমুখ।
শিবরাত্রি উদযাপন দেখতে গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের হিন্দু মুসলিম সর্বস্তরের জনতা ভিড় জমায়। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী আনন্দ কুমার ঘোষ, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা শ্রী হরনাথ মাহাতো, শ্রী লক্ষণ চন্দ্র মাহাতোসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।