সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা শহরের তাড়াশ বাজারের ব্যস্ততম রাস্তার উপর কাঁচা বাজার বসিয়েছেন স্থানীয় দোকানিরা। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন লোকজন। বিশেষ করে, বিদ্যালয়গামী রাস্তায় কাঁচা মালামাল রেখে ব্যবসা করায় যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
তাড়াশ পৌর শহরের ঘোষ পাড়া এলাকার বাসিন্দা তপন কুমার গোস্যাম্মী বলেন, বাজারের ভেতরের অন্যতম প্রধান সড়কের উপর দুই পাশে তরিতরকারির দোকানের কারণে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে উঠেছে। ক্রেতারা রাস্তার মধ্যেই সাইকেল ও মোটরসাইকেল রেখে দেন। সব্জি ব্যবসায়ীদের মালবাহী অটোটেম্পু, অটোভ্যানও রাস্তার মধ্যেখানে রেখে মালামাল নামানো হয়। তখন রাস্তা একেবারে বন্ধ থাকে।
তাড়াশ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী ছামিয়া জামান সকাল, ফুলপরি, ঈশিতাসহ অনেকে জানায়, রাস্তায় সব্জি বেচাকেনার কারণে বিদ্যালয়ে সময় মতো পৌঁছাতে পারিনা। বাড়ি ফিরতেও দেরি হয়ে যায়। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা খুবই কষ্টের।
জানা গেছে, বাজারের এই রাস্তা দিয়ে লোকজনের পাশাপাশি তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ডিগ্রি কলেজ, মহিলা কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ ও বিভিন্ন মাদ্রাসার অসংখ্যা ছাত্রছাত্রী যাতায়াতে করেন। এদিকে তাড়াশ বাজারের আতিকুল ইসলাম কবীর নামে একজন ফলের দোকানদার বলেন, মুদি দোকানিরা রাস্তা দখলে নিয়ে ব্যবসা করছেন বছরের পর বছর ধরে। কিন্তু কোনো প্রতিকার নাই। ব্যবসায়ীরা পঁচা তরিতরকারি ফেলে বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল করে দিয়েছেন। হোটেলগুলোর পানি রাস্তায় উপর দিয়েই গড়ে যায়। তখন উদ্ভট গন্ধে নাক মুখ চেপে বসে থাকতে হয়।
এই দোকানদার আরও বলেন, বাজারের রাস্তা দিয়ে একজন মানুষ ও একটি অটোভ্যান এক সঙ্গে চলাচল করতে পারেনা। এজন্য ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটে। সেদিনও এক নারী হেঁটে যাওয়ার সময় তার শাড়ী ভ্যানের চাকার মধ্যে জড়িয়ে যায়। পরে চিৎকার দিয়ে উঠলে অল্পতে রক্ষা পায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা তাদের নিজ নিজ মুদি দোকানের সামনে আড়াই থেকে তিন হাত জায়গা দখল করে তরিতরকারি রেখেছেন। কেউবা সড়কের উপরেই চৌকি বসিয়ে ব্যবসা করছেন। একটি অটোটেম্পু থেকে মালামাল নামানো হচ্ছে। টেম্পুর সামনে একটি অটোভ্যান আটকে রয়েছে। লোকজনও কোনো দিক দিয়ে যেতে পারছেনা।
তাড়াশ বাজার কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মৌখিকভাবে বারংবার রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে দোকানীদের। এখন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) ও পৌর প্রশাসক মো. মেজবাউল করিম সময়ের সংবাদকে বলেন, দোকানিদের নোটিশ করা হবে বাজারের রাস্তা মুক্ত করে দেওয়ার জন্য। এ পন্থায় কাজ না হলে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করা হবে। সমস্যা দীর্ঘ দিনের। নিরসনে একটু সময় লাগবেই।